Pages

Wednesday, July 27, 2016

বজ্রপাতের সময় কি করবেন?

http://banglanews2010.blogspot.com/
বজ্রপাতের সময় কী করতে হবে তা অনেকেরই অজানা। এসময়ে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। বাংলাদেশে বিশেষ করে বর্ষাকালে আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখলেই সাবধান হতে হবে। মেঘের আওয়াজ শুনলেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে। এসময় পাকা বাড়িতে আশ্রয় নেয়া বেশি নিরাপদ। গাড়ির ভেতরেও আশ্রয় নেয়া যেতে পারে। গাছের নিচে, টেলিফোনের খুঁটির পাশে বা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের খুঁটির পাশে দাঁড়ানো মোটেও নিরাপদ নয়। ফাঁকা মাঠের মধ্যে অবস্থান সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। পানির সংস্পর্শে মোটেই যাওয়া যাবে না। বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন না থামা পর্যন্ত নিরাপদে থাকা বাঞ্ছনীয়।
বজ্রপাতের আওয়াজ শোনার আগেই তা মাটি স্পর্শ করে। সোজাসোজি মানুষের গায়ে পড়লে মৃত্যু অবধারিত। বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে স্পর্শ না করে শুকনো কাঠ দিয়ে ধাক্কা দিতে হবে। ঝড়ের পূর্বাভাস দেখলে কখনও খোলা মাঠ, পাহাড়ের চূড়া, সমুদ্র সৈকতে অবস্থান করা মোটেও ঠিক নয়।
অনেক সময় আছে যখন নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। তখন নিজেকে যতটা সম্ভব গুটিয়ে নিন। মাথার চুল যদি একদিকে লম্বা হয়ে থাকে তাহলে বজ্রপাত পড়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ বজ্রপাত সব সময় উঁচুতে আঘাত করে।



বজ্রপাতের সময় কোন খোলা মাঠে বা খোলা স্থানে দাঁড়াবেন না, যদি ওই স্থানে কোনো বড় গাছ না থাকে, তবে আপনি সেই স্থানের সব থেকে উচু। তাই বজ্রপাত আপনাকেই স্পর্শ করবে।
যদি খোলা মাঠে থাকেনও তাহলে পায়ের পাতায় ভর করে হাটুর উপর হাত রেখে যতটা সম্ভব মাথা নিচু করে রাখুন। হাটু বা হাত যেন  কোনোটাই মাটিতে স্পর্শ না করে।
অনেকে মনে করেন, বজ্রপাতের সময় শুয়ে পড়তে হয়। এটা খুবই মারাত্মক ভুল ধারণা। এতে বজ্রপাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা শতভাগ। যদি নদীতে নৌকায় থাকেন তাহলে একইভাবে নিজেকে গুটিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে ছইয়ের নিচে অবস্থান নিতে পারেন। বনের মধ্যে থাকলে বড় গাছের নিচে না গিয়ে ছোট গাছপালার নিচে নিজেকে গুঁটিয়ে রাখুন।
কর্ডযুক্ত কোনো ফোন ব্যবহার করা যাবে না। বাড়ি নিরাপদ রাখতে আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে। বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত পানির ফোয়ারায় গোসল করা যাবে না। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হলে বিদ্যুতের সব সুইচ বন্ধ রাখতে হবে এবং দরজা-জানালা ভালোমতো বন্ধ রাখতে হবে। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালা স্পর্শ করা যাবে না। এ সময় ধাতববস্তু যেমন : বাড়ির ধাতবকল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না। বজ্রপাতের সময় এগুলো স্পর্শ করেও বহু মানুষ আহত হয়।
বিদ্যুৎচালিত বিভিন্ন যন্ত্র যেমন- টিভি, ফ্রিজ, পানির মোটর ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরা উচিত না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
বজ্রপাত হওয়ার আগের মুহূর্তের কয়েকটি লক্ষণ দেখে এটা বোঝা যেতে পারে। যেমন : বিদ্যুতের প্রভাবে আপনার চুল খাড়া হয়ে যাবে, ত্বক শিরশির করবে বা বিদ্যুৎ অনুভূত হবে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য বজ্রপাত প্রাকৃতিক চার্জ হিসেবে কাজ করে। তাই বজ্রপাতকে প্রতিরোধ করা সম্ভব না। তবে উপস্থিত বুদ্ধি ও কৌশল জেনে সময়মতো কাজে লাগিয়ে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

0 comments:

Post a Comment

 
Blogger Templates