Pages

Sunday, August 14, 2016

নিরামিষ ভোজীদের হূদরোগের ঝুঁকি ৩২ ভাগ কম

http://banglanews2010.blogspot.com/
মাছ, মাংসের পরিবর্তে যারা শাক সবজি জাতীয় খাবার বেশি খায় তাদের হূদরোগের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিরামিষভোজীদের হূদপিন্ডের স্বাস্থ্যগত অবস্থাও অনেক বেশি ভালো থাকে।

ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের সাড়ে ৪৪ হাজার লোকের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, নিরামিষভোজীদের হাসপাতালে চিকিত্সা নেয়ার ক্ষেত্রে কিংবা মৃত্যুঝুঁকি অন্যদের থেকে শতকরা ৩২ ভাগ কম থাকে। শারীরিক সুস্থ্যতার ক্ষেত্রে কোলেস্টরেলের মাত্রার তারতম্য, রক্তের চাপ কিংবা ওজনের বিশেষ ভূমিকা থাকে। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের এক নিবন্ধে এ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলোতে হূদরোগ অধিকতর অনিষ্টকারী একটি ব্যাধি। অন্যান্য রোগের চেয়ে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ৯৪ হাজার লোক মারা যায়। ২.৬ মিলিয়ন লোক শরীরে হূদরোগ নিয়ে বেঁচে থাকে। হূদপিন্ডের রক্ত সরবরাহকারী ধমনীতে চর্বি জমা হয়ে রক্তচলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। ধমনীতে ধীরে ধীরে চর্বি জমা হয়ে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেলে হূদক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো জটিল অবস্থার সৃষ্টি করে।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি'র বিজ্ঞানীরা ১৫ হাজার ১'শ নিরামিষ ভোজী এবং ২৯ হাজার ৪'শ মাছ, মাংস ভোজী মানুষের ওপর এ গবেষণা চালায়। ১১ বছর ধরে এসব মানুষের ওপর গবেষণা চালানো হয়। এ সময়ের মধ্যে হূদরোগের কারণে ১৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১ হাজার ৬৬ জনকে হাসপাতালে চিকিত্সা নিতে হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিরামিষভোজীদের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের পরিমাণ কম থাকার পাশাপাশি শরীরে কোলেস্টরেলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। শাক সবজিতে দ্রবীভূত চর্বির পরিমাণ খুব কম থাকে। এ কারণেই নিরামিষভোজীদের হূদরোগের ঝুঁকিও অনেক কম থাকে।

ডা. ফান্সসেক্সো ক্রো বলেন, গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা যে বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই তাহলো নিরামিষভোজীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি অন্যদের চেয়ে অনেক কম থাকে। তার মানে এই নয় যে, সবাইকেই নিরামিষ ভোজী হতে হবে।

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনে কর্মরত ট্রেসি পার্কার বলেন, গবেষণা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট বোঝা যায় যে হূদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে সুষম খাদ্যের কোন বিকল্প নেই। খাদ্য তালিকায় মাংস থাকবে কী থাকবে না এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। খাদ্য তালিকা থেকে মাংস বাদ দিলেই যে হূদরোগের ঝুঁকি একেবারেই কমে যায় সেটাও জোর দিয়ে বলা যায় না। কারণ মাংস বাদেও এমন অনেক খাবার রয়েছে যেখানে দ্রবীভূত চর্বির পরিমাণ অনেক বেশি থাকতে পারে। তাই নিরামিষভোজীদের এ বিষয়গুলি মাথায় রেখেই খাদ্য তালিকা ঠিক করা উচিত্। আবার খাদ্য তালিকা থেকে মাছ, মাংস বাদ দেয়ার ফলে সেখান থেকে যেসব উপাদান পাওয়া যেত সেগুলোর ঘাটতি পূরণের ওপরও জোর দিতে হবে। মাছ, মাংস থেকে পাওয়া ভিটামিন, মিনারেল কিংবা আয়রন জাতীয় খাদ্য উপাদানের জন্য বিকল্প খাদ্যাভ্যাস তৈরি করে নিতে হবে।

0 comments:

Post a Comment

 
Blogger Templates