আমাদের চোখের চারপাশের ত্বক খুবই
স্পর্শকাতর। সামান্য অবহেলাতেই দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। তাই প্রথম থেকে
সচেতন থাকুন এবং বিশেষ যত্ন নিন।
চোখের পাতায় কাজলের গাঢ় টান, মাসকারার
ঘন প্রলেপকে আড়াল করে যদি আগে নজর যায় চোখের চারপাশের কুঁচকানো ত্বক ও
বলিরেখার দিকে তা হলে সেটা নিশ্চয় আপনার পক্ষে খুব একটা সুখকর অভিজ্ঞতা হবে
না! ডার্কসার্কলসহীন অভিব্যক্তিতে পূর্ণ কোমল দুই চোখের আবেদন উপেক্ষা করা
কখনওই সম্ভব নয়। কীভাবে পাবেন সেই আবেশ জড়ানো চোখ, রইল তা নিয়েই একটি
বিশেষ আলোচনা।
১. কখনও চোখের চারপাশের ত্বক ঘসে ঘসে মুছবেন না। চোখ ধোয়ার পরে নরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে হালকা করে থুপে থুপে জল মুছে নিন। খুব জোরে ঘসলে চোখের চারপাশের ত্বকে ইরিটেশন তৈরি হয় এবং ত্বক কুঁচকে যায়।
২. প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে যত ক্লান্তই থাকুন না কেন চোখের মেক-আপ
তুলতে কখনও ভুলবেন না। সারা রাত মেকআপ না তুললে পরোক্ষে ক্ষতি আপনারই হবে।
আসলে মেকআপে নানা রকম কেমিক্যাল থাকে, যা বেশিক্ষণ ত্বকের ওপরে থাকলে
ত্বকের নানা রকম সমস্যা যেমন অ্যালার্জি হতে পারে।
৩. আই মেকআপ রিমুভার আলাদা পাওয়া যায়। যে কোনও নামী কোম্পানির প্রোডাক্ট
রেঞ্জে এই আই মেকআপ রিমুভার পেয়ে যাবেন। তবে এই রিমুভার কেনার আগে দেখে
নেবেন যে এটি অয়েল ফ্রি কিনা। যে সব প্রোডাক্টে তেল আছে তা ব্যবহার করলে
চোখের চারপাশে ক্লগড গ্ল্যান্ডসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা
নিয়মিত কনট্যাক্ট লেন্স পড়েন, তাঁরা করে অয়েল বেসড প্রোডাক্ট একেবারেই
এড়িয়ে চলবেন। কারণ অয়েল বেসড আই মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করলে অনেক সময়ে
ব্লারড ভিশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর কোনও রকমের ইনফেকশন এড়ানোর জন্যে
একটা দিকে সব সময়ে খেয়াল রাখবেন। রিমুভার কন্টেনারের ভিতরে আঙুল দেবেন না।
সব সময়ে তুলো ব্যবহার করবেন।
৪. চড়া রোদ এবং আলট্রাভায়োলেট রেজ় চোখের চারপাশের ত্বকেরও খুব ক্ষতি করে।
তাই রোদে বেরোনোর আগে অবশ্যই চোখের চারপাশে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে নেবেন
এবং সানগ্লাস ইজ় আ মাস্ট। সানগ্লাস ছাড়া কখনওই রোদে বেরোবেন না।
৫. সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে জল খান। জল ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতে সাহায্য করে। দিনে অন্তত এক থেকে দেড় লিটার জল অবশ্যই খাবেন।
৬. প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুম একান্তই প্রয়োজন। খুব বেশি স্ট্রেস এবং কম ঘুম থেকে চোখের তলায় কালি পড়ে যাবে।
৭. বেশি ধূমপান এবং ড্রিংক করলে ত্বক ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। ফলে চোখের চারপাশের ত্বকও ড্রাই হয়ে গিয়ে কুঁচকে যায়।
৮. অনেকেরই একটা স্বভাব আছে চোখ কুঁচকে তাকানোর। এই স্বভাবটটা যত তাড়াতাড়ি
সম্ভব ছেড়ে দিন। চোখ কুঁচকে তাকালে চোখের চারপাশের ত্বকে স্ট্রেস পড়ে এবং
তার ফলে ফাইন লাইনস দেখা দেয়, যাকে সহজ ভাষায় রিঙ্কলস্ বলে।
৯. প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে আই মেকআপ রিমুভ করে আন্ডার আই জেল বা
ময়েশ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নেবেন। এতে চোখের চারপাশের সেন্সিটিভ ত্বক আরাম পাবে
এবং ক্ষতিগ্রস্থ সেলগুলো রিজুভিনেটেড হবে।
১০. চোখের তলায় ডার্ক সার্ককলস্ কমানোর জন্যে একটি সহজ ঘরোয়া প্যাক ট্রাই
করে দেখতে পারেন। একটা টোম্যাটো ভালভাবে পেস্ট করে নিয়ে তার মধ্যে এক চিমটে
হলুদগুঁড়ো, ও সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি চোখের চারপাশে দশ
মিনিট মতো লাগিয়ে রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
১১. শসা স্লাইস করে নিয়ে চোখের ওপরে দশ থেকে পনেরো মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এতে
চোখের চারপাশের ত্বকে সতেজতা ফিরে আসবে আর নিয়মিত করতে পারলে ডার্ক
সার্কলসের সমস্যাও মিটে যাবে।
১২. ঠাণ্ডা গোলাপ জলে তুলো ভিজিয়ে চোখের পাতায় দশ থেকে পনেরো মিনিট লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন অনেক বেশি ফ্রেশ এবং রিজুভিনেটেড লাগবে।

0 comments:
Post a Comment