Pages

Saturday, January 21, 2017

স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করার কিছু টিপস

আমাদের এই ব্যস্ত জীবনে আর দূষণ ভরা পরিবেশে নিজের সৌন্দর্য ধরে রাখা সত্যিকার অর্থেই ভীষণ মুশকিল হয়ে পড়ছে দিন দিন। অথচ আজকাল নিজেকে লুক সবসময় সুন্দর ও আকর্ষণীয় রাখাটা যেন জীবনেরই একটা অংশ, তাই নয় কি? আপনি নারী হোন, বা পুরুষ, আপনার সুন্দর মুখের কদর কিন্তু সর্বত্রই। আর তাই নিজেকে সুন্দর করে দেখাতে কে না চায় বলুন! আমাদের অনেকেরই আক্ষেপ থাকে গায়ের রং নিয়ে।

স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করার কিছু টিপস

এখন আমরা আপনাকে কিছু টিপস দিব আপনার শরীর ও ত্বক স্থায়ীভাবে ফর্সা করার জন্য।
১) প্রথমে মসুর ডাল গুঁড়ো করে নিন মিহি করে। তার মধ্যে একটা ডিমের হলুদ অংশটা মেশান। রোদের মধ্যে কিছু সময় এই পেস্টটা শুকিয়ে নিন ভালো করে। পেস্টটি একদম মচমচে হয়ে গেলে গুঁড়ো করে পরিষ্কার শিশির মধ্যে ভরে রেখে দিন। প্রতিদিন রাতে শোবার কিছু সময় আগে ২ ফোটা লেবুর রসের সঙ্গে ১ চামচ দুধ ও এই গুঁড়ো খানিকটা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। আধ ঘন্টা বা তার কিছু সময় পর মুখটা ধুয়ে ফেলুন। মুখ ধোয়ার পর কাঁচা দুধ খানিকটা পরিষ্কার তুলোতে নিয়ে মুখে বুলিয়ে নিন। এটা আরও ২০ মিনিট মুখে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
২)  আপনার ত্বকের রং আরও ফর্সা করতে চাইলে মুখে টক দই লাগান মুখে। সাধারণত যাদের ত্বক শুষ্ক তাঁরা মধু ও দই একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। ৩০ মিনিট এর মতো রাখুন মুখে, তারপরে ধুয়ে ফেলুন। আপনাকে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন এরকম লাগাতে হবে।
৩) এবার একটু ভিন্নভাবে ব্যবহার করুন। প্রথমে এক টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ, ১/২ টেবিল চামচ বাদামের তেল, এক টেবিল চামচ মধু, এক টেবিল চামচ লেবুর রস ভালো ভাবে মিশিয়ে মুখে ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। তারপর শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার করুন। এই প্যাকটি আপনার মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে আর রোদে পোড়া ভাব দূর করবে।
৪) আপনার তৈলাক্ত ত্বক স্থায়ীভাবে উজ্জ্বল করতে মুলতানি মাটি, থেঁতো করা পদ্মপাপড়ি ও নিমপাতা বাটা এবং চালের গুঁড়ো একসঙে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। ভালভাবে মুখে-গলায় লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ধুয়ে ফেলার পর যদি পারেন মুখে কাঁচা দুধ লাগিয়ে রাখুন আরও আধা ঘণ্টা। ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
৫) আপনি সপ্তাহে একবার পাকা কলা চটকিয়ে পুরো মুখে লাগান আর ৩/৪ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। মুখে লুকিয়ে থাকা সব ময়লা নিমিষে পালিয়ে যাবে আর আপনি হয়ে উঠবেন আগের থেকে আরও অনেক বেশি আকর্ষণীয়।
৬) ঝকঝকে ও আকর্ষণীয় ত্বকের জন্য চন্দন গুঁড়োর অবদান অনস্বীকার্য। আপনি চন্দন গুঁড়োর সাথে পরিমাণ মতো দুধ মিশিয়ে প্রত্যেকদিন হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। অল্প দিনের মধ্যে আপনার মুখে হাসি ফুটবেই। কিছু দিন পর আপনাকে মুখের পরিবর্তন আপনি নিজেই বুজতে পারবেন।

স্পেশাল বিউটি টিপসঃ

উপকরণঃ দুধ তিন টেবিল চামচ, কাঁচা হলুদ বাটা এক চা চামচ, লেবুর রস এক টেবিল চামচ।
প্রনালিঃ প্রথমে দুধ, লেবুর রস ও হলুদ গুঁড়ো একসঙ্গে ভালভাবে মিশিয়ে একটি মিশ্রন বা পেস্ট তৈরি করুন। আপনার সারা মুখে এই পেস্ট ভালভাবে লাগিয়ে প্যাকটি শুকনো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকুন। ভালভাবে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুছে ফেলুন। তবে সতর্কতা হল, গরম জলে মুখ ধোবেন না এবং অন্তত ১২ ঘণ্টা রোদে যাবেন না। তাই আপনি এটা রাতে করবেন।

ভেতর থেকে রঙ উজ্জ্বল করুন

মানুষের রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। আপনি প্রতিদিন এক গ্লাস উষ্ণ গরম দুধে আধা চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে পান করুন। আর যদি এভাবে পান করতে না পারেন বা সমস্যা হলে আপনি এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন। নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ পান করার ফলে আপনার রং হয়ে উঠবে ভেতর থেকে ফর্সা।

ভিটামিনযুক্ত কচু শাকের গুনাগুণ সম্পর্কে জানুন

কচুশাকের পরিচিতি

কচুশাক নামটা শুনতে যেন মনে হই নরমাল একটা শাক বা তরকারি। কিন্ত এটা মটেও নরমাল শাক নয়। আজ আমরা জানব কচু শাকের যত গুনাগুণ। কচুশাক সাধারণত আমাদের দেশের একটা জনপ্রিয় শাক, লোক মুখে শুনা যায় এই শাকের উপকারিতা অনেক বেশি। কচুশাক আয়রনসমৃদ্ধ বলে এর সমাদরও অনেক বেশি। আমাদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে সব ডাক্তাররাই কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন। আমরা অনেকেই এই শাক সেই ছোট বেলা থেকেই খেয়ে আসছি।

সবজি হিসাবে কচুশাকের গুনাগুণ

শাকসবজিপ্রেমী প্রায় সব ভোজনরসিকের কাছেই কচুশাক খুবই পরিচিত একটা খাবার। ‘কচু’ কেবলই ‘কচু’ নয়, আমরা হইত অনেকেই জানি না এই শাকের উপকারিতা। সবার পরিচিত এই কচু শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম, ‍আয়রনসহ অন্যান্য পুষ্টিগুণ যা হইত আমাদের অনেকেরই জানা নাই। কচুশাক প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের যোগান ছাড়াও বিভিন্ন রোগের পথ্য হিসেবেও অনেক বড় ভূমিকা রেখে আসছে। কচুশাকে পর্যাপ্ত অাঁশ থাকায় মানুষের দেহের পরিপাকতন্ত্রের প্রক্রিয়ায়ও কার্যকর ভূমিকা রাখে। শুধুমাত্র কচু শাক ছাড়াও এর মাটির নিচের অংশটিতেও (কচুমুখী) রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপাদান। আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ করতে কচুশাকের জুড়ি নেই।সাধারণত আমরা দু’ধরনের কচুশাক ভোজন করে থাকি বা খেয়ে থাকি। এটা হল সবুজ কচুশাক ও কালো কচুশাক।

কচুশাকের পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ কচুশাকে থাকে- ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ৩.৯ গ্রাম প্রোটিন, ১০ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.২২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০.২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লেবিন), ১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’, ১.৫ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৫৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি।
প্রতি ১০০ গাম কালো কচুশাকে থাকে-৮.১ গ্রাম শর্করা, ৬.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৩৮.৭ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০.৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লোবিন), ৬৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ২.০ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ৪৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৭৭ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি।
কচু শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশক্তি এবং ভিটামিনে ভরপুর। সাধারণভাবে ব্যাখ্যা করতে গেলে প্রথমে বলতে হবে কচুর ডগা এবং কালো রঙয়ের কচু শাকে আয়রন থাকে প্রচুর পরিমাণে যা পুষ্টিতে পরিপূর্ণ। সাধারানত রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য কচুশাক খাওয়া একরকম আবশ্যক বললেই চলে। সাধারণত যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, বিশেষ করে তাঁরা প্রচুর পরিমাণে কচুশাক খেতে পারেন। কারণ এই কচু শাকে আছে অনেক আঁশ। এই আঁশ খাবারকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে থাকে।
আমাদের শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বজায় রাখতে কচু শাকের জুড়ি নেই।সাধারণত দেখা যায় আমাদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে এমনিতেই অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যায় তখন আমরা আশুস্থ হয়ে পড়ি। তখন আমাদের শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে কচু শাক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু কি তাই আমাদেরশরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কচুশাক দারূণ ভূমিকা রাখে। তবে কচুশাক এককভাবে আমাদের শরীরে নির্দিষ্ট অঙ্গপ্রত্যঙ্গের রোগের জন্য এই শাক কাজ না করলেও অন্যভাবে যেমন এটি পুষ্টিসমৃদ্ধ হিসাবে পুরো শরীরেরই উপকার করে।
ভিটামিনযুক্ত কচু শাকের গুনাগুণ সম্পর্কে জানুন
কচুশাকের একটা সমস্যা আমরা দেখে থাকি যে মাঝে মাঝে তরকারিতে এটি সামান্য গলা চুলকায়। এটা  ছাড়া কচু শাকের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা খারাপ প্রভাব নেই বললেই চলে। তবে একটা কথা আছে শাকে যতোটুকু ক্ষতিকর অক্সালিক অ্যাসিড থাকে তা আপনি যদি একরাত পানিতে ভিজিয়ে রাখেন তাহলে এটা সহজেই চলে যায়। তাই আমরা আপনাকে সাজেশন বা পরামর্শ দিব যে কচু শাক খান নিশ্চিন্তে।

কচু শাকের উপকারিতাঃ

১. কচুশাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ যা আমাদের রাতকানা, ছানি পড়াসহ চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধসহ দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।
২. কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকায় এর লৌহ উপাদান আপনার দেহে সহজে আত্তীকরণ হয়ে যায়।
৩. কচুশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, যা দেহের বৃদ্ধি ও কোষ গঠনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। কচু শাকের ভিটামিন কোষের পুনর্গঠনে সহায়তা করে।
৪. ভিটামিনযুক্ত এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যআঁশ, যা অন্ত্রের বিভিন্ন রোগ দূরে রাখে। পরিপাকক্রিয়াকে পুরপুরিভবেই ত্বরান্বিত করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৫. এই শাকের আয়রন ও ফোলেট রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে অক্সিজেন সংবহন পর্যাপ্ত থাকে। এতে উপস্থিত ভিটামিন কে রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
৬. এই শাকের সবথেকে বড় উপকারিতা হল এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফসফরাস। আমাদের দাঁত ও শরীরের হাড়ের গঠনে এবং ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে এসব উপাদানে কচু শাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. সাধারণত বাচ্চাদের জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য দুধ কচু খাওয়ালে বেশ উপকার পাওয়া যায়। আবার বড়দের ক্ষেত্রে এটা খুব কার্যকরী। শুধু তাই নয় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ওল কচুর রস উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়ানো হয় এবং এতে বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়।

সর্বরোগের ঔষধ কালোজিরা। উপকারিতা জানুন, সুস্থ থাকুন।


http://banglanews2010.blogspot.com/

কালোজিরার পরিচিতি

কালোজিরা আমরা ছোট বড় সবাই চিনি। সাধারণত কালোজিরা নামে পরিচিত হলেও এটার আরো কিছু নাম আছে, যেমন- কালো কেওড়া, নিজেলা, ফিনেল ফ্লাওয়ার, হাব্বাটুসউডা, রোমান করিয়েন্ডার বা রোমান ধনে ও কালঞ্জি ইত্যাদি। কালোজিরার বৈজ্ঞানিক নাম হল nigella sativa। আপনি যে কোন নামেই ডাকুন না কেন এই কালো বীজের স্বাস্থ্য উপকারিতা অপরিসীম যা বলে শেষ করা যাবে না। কালোজিরা আমদের শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিধন থেকে শুরু করে শরীরের কোষ ও কলার বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে কালোজিরা শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের জন্যই না এটা চুল ও ত্বকের জন্যও অনেক উপকারি। রাঁধুনিরা রান্নাঘরেই কালোজিরা রেখে দেন যা খাবারকে সুবাসিত করে।
১৫ টি অ্যামোইনো এসিড সমৃদ্ধ কালোজিরা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই কালোজিরায় প্রোটিনের পরিমাণ ২১ শতাংশ, শর্করা ৩৮ শতাংশ এবং স্নেহজাতীয় পদার্থ রয়েছে ৩৫ শতাংশ।  শুধু কি তাই এছাড়া অন্যান্য ভিটামিন আর খনিজ উপাদান তো রয়েছেই কালোজিরাতে। আমদের সুস্থ থাকার জন্য শরীরের প্রয়োজনীয় সবকটি মূল উপাদানই কালোজিরায় রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। তাই আপনি আর দেরি না করে প্রতিদিনই অল্প পরিমাণে কালোজিরা রাখতে পারেন আপনার খাদ্য তালিকায়।

কালোজিরার পুষ্টিগুণ

শুধুমাত্র পুষ্টিগুণে নয়, মসলা হিসেবে কালো জিরার চাহিদাও অনেক। কালো জিরার বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। কালোজিরাতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফসফেট, লৌহ এবং ফসফরাস। এছাড়া কালজিরাতে আরও রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধক কেরটিন, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান এবং অম্ল রোগের প্রতিষেধক। কালোজিরাকে আমরা কে না জানি ছোট বা বড় সকলেই চিনি? নামে এটা জিরা হলেও আসলে কিন্তু স্বাদে গন্ধে জিরার সাথে এর কোনও মিল নেই। আর ব্যবহার এর দিক থেকেও জিরার মতন নয়। কালোজিরার বিভিন্ন নাম হলেও ইংরেজিতে কালো জিরা “Nijella seed” নামে পরিচিত। বাঙালির খাদ্য তালিকায় পাঁচফোড়ন থেকে শুরু করে সিঙ্গারা আর নানান রকম ভর্তায় কালোজিরা না হলে কি চলে? কালজিরা সাধারণত আয়ুর্বেদিক, ইউনানি এবং কবিজারি চিকিৎসাতেও ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে।

আসুন জেনে নেয়া যাক আশ্চর্য বীজ কালোজিরার উপকারিতা গুলোঃ

১. স্মরণশক্তি বৃদ্ধিঃ আপনি নিয়মিত কালিজিরা খান। এটি আপনার মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। যার দরুন  আপনার স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পাবে। এর সঙ্গে এটি প্রাণশক্তি বাড়ায় এবং আপনার ক্লান্তি দূর করবে।
২. শরীরের ব্যথা কমাতে: আপনার শরীরে যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে কালো জিরার জুড়ি নেই। প্রথমে কালিজিরার তেল হালকা গরম করে নিন তারপর আপনার  ব্যথার জায়গায় মালিশ করুন, ব্যথা অনেকটা সেরে যাবে। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যাক্তিদের বাতের ব্যথায় বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়।
৩. কালোজিরা আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করবেঃ আপনি যদি চান তাহলে কালোজিরার তেল শুধুমাত্র ব্যবহার করুন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য। শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি ও দূর করতে এটি অনেক বড় একটা ভূমিকা পালন করে থাকে। হৃদরোগ নিয়ন্ত্রন করে থাকে কালোজিরা।
৪. মাথাব্যাথাঃ  কালো জিরার তেল মাথা ব্যাথা সারাতে দারুন উপকারী  বটে। কালো জিরার তেল কপালে মালিশ করলে এবং তিন দিন খালি পেটে ১ চা চামচ তেল খেলে আরোগ্য লাভ করা যায় ।
৫. লিভার ক্যান্সারঃ আফলাটক্সিন সাধারণত লিভার কান্সার এর জন্য দায়ী। কালোজিরা এই আফলাটক্সিন নামক বিষ ধ্বংস করে।যারা লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত তারা আজ থেকে খাওয়া শুরু করে দিন।
৬. যৌনশক্তি বৃদ্ধিতেঃ মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত আছে যে, কালো জিরা যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। তবে একটা কথা, পুরানো কালো জিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
৭. সর্দি-কাশিতে কালোজিরাঃ  জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশিতে এক চা-চামচ কালোজিরার সঙ্গে তিন চা-চামচ মধু ও দুই চা-চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন একবার সেবন করুন। কালোজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিন যদি সর্দি বসে যায়। একই সঙ্গে পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে কালোজিরা বেঁধে শুকতে থাকুন, শ্লেষ্মা তরল হয়ে ঝরে যাবে। তাড়াতাড়ি ভালো ফল পেতে বুকে ও পিঠে কালিজিরার তেল মালিশ করুন। 
সর্বরোগের ঔষধ কালোজিরা। উপকারিতা জানুন, সুস্থ থাকুন।
৮. চুলপড়ারোধে কালোজিরাঃ নিয়মিতভাবে কালোজিরা খেয়ে যান এতে আপনার চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে। ফলে চুল পড়া অনেকটা বন্ধ হবে। আর যদি ভালো ফল পেতে চান তাহলে চুলের গোড়ায় এর তেল মালিশ করতে থাকুন।
৯. দাঁতের ব্যথায় সারাতে: অনেক দিন ধরে দাঁত ব্যথা, মাঢ়ি ফুলে গেছে বা রক্ত পড়ছে তাহলে কালো জিরা খাওয়া শুরু করুন, কালোজিরা আপনার ব্যাথা উপশম করতে পারে। প্রথমে পানিতে কালিজিরা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এই পানির তাপমাত্রা একটু কমে গেলে অর্থাৎ উষ্ণ অবস্থায় এলে তা দিয়ে কুলি করুন। এতে করে আপনার দাঁত ব্যথা কমে যাবে, মাঢ়ির ফোলা বা রক্ত পড়া বন্ধ হবে। এছাড়া আপনার জিহ্বা, তালু ও মুখের জীবাণু ধ্বংস হবে।
১০.  হোমিওপ্যাথি ঔষধ তৈরিতেঃ আমাদের দেশে এখনও হোমিওপ্যাথি ঔষধ তৈরি করতে কালোজিরার জুড়ি নেই। সেই প্রাচীনকাল থেকে হোমিওপ্যাথি ঔষধ তৈরিতে কালোজিরা ব্যবহার হয়ে আসছে।
১১. বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধিঃ মায়েদের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন রাত্রে শোবার আগে ৫-১০ গ্রাম কালোজিরা মিহি করে দুধের সঙ্গে খেতে থাকুন। ইনশাআল্লাহ্ মাত্র ১০-১৫ দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে। এছাড়া এ সমস্যা সমাধানে কালোজিরা-র ভর্তা করে ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন।
১২. সকাল রোগের প্রতিষেধক: আপনি হয়ত বিশ্বাস করতে পারবেন না কিন্তু সত্য হল  আপনি মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবন করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল মহামারী হতে রক্ষা পেতে পারেন।

সতর্কতা :

কালোজিরার একটা সতর্কতা আছে।তা হল গর্ভাবস্থায় ও দুই বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের কালোজিরার তেল সেবন করা উচিত নয়। তবে আপনি চাইলে বাহ্যিক ভাবে ব্যবহার করতে পারেন।

পরিশেষে :

আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের জন্য কালোজিরার ভূমিকা অনন্য। কালোজিরাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আশ্চর্যজনক ভাবে অতুলনীয়, আর তা কালোজিরার রস/তেলের মধ্যেই বিদ্যমান। রাসুল (সঃ) এর পবিত্র মমার্থ থেকে বর্ণিত যে, কালোজিরার তেল ব্যবহার ওসেবন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করে এবং রোগ মুক্ত রাখে। মানুষ ২০০০ বছর ধরে ঔষধ হিসেবে কালো জিরার বীজ ব্যবহার করেছে। এটা লতাপাতা জতীয় একটি উদ্ভিদ। এর সূক্ষ্ম বেগুনি ও সাদা ফুল হয়ে থাকে।
 
Blogger Templates